(Q) ভৌত রাশি বা প্রাকৃতিক রাশি কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
Ans : ভৌত রাশি বা প্রাকৃতিক রাশি:পরিমাপযোগ্য যে-কোনো প্রাকৃতিক বিষয়কে ভৌত রাশি বা প্রাকৃতিক রাশি বলে।
যেমন-আমরা কোনো বস্তুর দৈর্ঘ্য, ভর, আয়তন, ঘনত্ব ইত্যাদি বিষয় পরিমাপ করতে পারি। সুতরাং, দৈর্ঘ্য, ভর, আয়তন, ঘনত্ব প্রভৃতি ভৌত রাশি বা প্রাকৃতিক রাশি।
(Q) জলকে ভৌত রাশি বলা হয় না কেন?
Ans : জল তরল পদার্থ। একে পরিমাপ করা যায় না। এর আয়তন, ভর ও ঘনত্ব পরিমাপ করা যায়। তাই জল ভৌত রাশি নয়।
(Q) ভৌত রাশি কয়প্রকার ও কী কী?
Ans : ভৌত রাশি দুই প্রকার। যথা- (i) স্কেলার রাশি এবং (ii) ভেক্টর রাশি।
(Q) স্কেলার রাশি কাকে বলে?
Ans : যেসব রাশির কেবল মান আছে, কিন্তু কোনো দিক নেই, তাদের স্কেলার রাশি বলে। যেমন-ভর, সময়, আয়তন, কার্য, শক্তি ইত্যাদি।
(Q) ভেক্টর রাশি কাকে বলে?
Ans : যেসব রাশির মান ও দিক দুই-ই আছে এবং যাদের যোগ বা বিয়োগ বীজগাণিতিক নিয়মানুযায়ী হয় না, ভেক্টরের নিয়মানুযায়ী হয় তাদের ভেক্টর রাশি বলে। যেমন-বল, ত্বরণ, ওজন ইত্যাদি।
(Q) নীচের রাশিগুলির মধ্যে কোনটি স্কেলার ও কোনটি ভেক্টর রাশি লেখো: দৈর্ঘ্য, ওজন, কার্য, বেগ।
Ans :
স্কেলার রাশি: দৈর্ঘ্য, কার্য।
ভেক্টর রাশি: ওজন, বেগ।
(Q) বেগ, ত্বরণ, ভর ও দ্রুতির মধ্যে কোনগুলি ভেক্টর রাশি ও কোনগুলি স্কেলার রাশি?
Ans :
স্কেলার রাশি: ভর, দ্রুতি।
ভেক্টর রাশি: বেগ, ত্বরণ।
(Q) কয়েকটি স্কেলার ও ভেক্টর রাশির নাম লেখো, যাদের একক তিনটি মৌলিক একক দিয়ে গঠিত।
অনুরূপ প্রশ্ন: তিনটি মৌলিক একক দ্বারা গঠিত একটি স্কেলার এবং একটি ভেক্টর রাশির উদাহরণ দাও।
Ans : তিনটি মৌলিক একক দিয়ে গঠিত স্কেলার রাশিগুলি হল কার্য, চাপ, আপেক্ষিক তাপ এবং ভেক্টর রাশিগুলি হল বল, টর্ক, ভরবেগ।
(Q) কোনটি কোন্ রাশি তা উল্লেখ করো: দূরত্ব, ভার, দ্রুতি, কার্য, ভরবেগ, উষ্ণতা।
Ans :
স্কেলার রাশি: দূরত্ব, দ্রুতি, কার্য, উষ্ণতা।
ভেক্টর রাশি: ভার, ভরবেগ।
(Q) একই এককবিশিষ্ট দুটি রাশির উদাহরণ দাও যাদের একটি স্কেলার ও অপরটি ভেক্টর।
Ans : দ্রুতি ও বেগের একক একই হলেও দ্রুতি স্কেলার রাশি কিন্তু বেগ ভেক্টর রাশি।
(Q) একক কাকে বলে?
Ans : একক: কোনো ভৌত রাশির একটি নির্দিষ্ট ও সুবিধাজনক পরিমাণকে প্রমাণ ধরে ওই রাশিটি এবং তার সমজাতীয় রাশিকে পরিমাপ করা হয়। ওই নির্দিষ্ট প্রমাণ মানকে ওই ভৌত রাশির একক বলে।
যেমন-এক সেন্টিমিটার বা এক মিটারকে প্রমাণ ধরে দৈর্ঘ্য পরিমাপ করা হয়। সুতরাং, দৈর্ঘ্যের একক হল সেন্টিমিটার বা মিটার। সেইরকম ভরের একক হল গ্রাম বা কিলোগ্রাম ইত্যাদি।
(Q) এককের প্রয়োজনীয়তা কী?
Ans : এককের প্রয়োজনীয়তা:এককবিহীন রাশির কোনো অর্থ হয় না। একটি রাশিকে সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করতে হলে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যার সঙ্গে একক যুক্ত করতে হয়। যেমন-একটি দণ্ডের দৈর্ঘ্য 5.8 বললে দন্ডটির দৈর্ঘ্য সম্বন্ধে আমরা কোনো ধারণা করতে পারি না। কিন্তু যদি বলা হয় যে, দণ্ডটির দৈর্ঘ্য 5.8 সেমি, তাহলে আমরা তার দৈর্ঘ্য সম্বন্ধে সঠিক ধারণা করতে পারি। এখানে দৈর্ঘ্য একটি ভৌত রাশি এবং সেমি তার একক। সুতরাং, কোনো ভৌত রাশিকে সঠিকভাবে বোঝাতে গেলে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা এবং নির্দিষ্ট এককের প্রয়োজন।
(Q) মূল (প্রাথমিক বা মৌলিক) এককের সংজ্ঞা দাও।
Ans : মূল একক: যেসব একক পরস্পরের ওপর নির্ভর করে না এবং যে একক থেকে অন্যান্য একক গঠন করা যায়, তাদের মূল একক বা প্রাথমিক একক বলে। যেমন-দৈর্ঘ্য, ভর এবং সময় এই তিনটি রাশির একক পরস্পরের ওপর নির্ভর করে না এবং এই তিনটি রাশির এককের সাহায্যে অন্যান্য রাশির একক গঠন করা যায়। তাই এদের মূল একক বা প্রাথমিক একক বলে।
সিজিএস পদ্ধতিতে মূল এককগুলি হল-দৈর্ঘ্যের একক সেমি, ভরের একক গ্রাম এবং সময়ের একক সেকেন্ড।
(Q) তড়িৎপ্রবাহ মাত্রা স্কেলার না ভেক্টর রাশি? যুক্তি দাও।
Ans : তড়িৎ প্রবাহমাত্রা স্কেলার রাশি। কারণ তড়িৎ প্রবাহমাত্রার নির্দিষ্ট মান ও অভিমুখ থাকলেও দুই বা ততোধিক প্রবাহমাত্রার যোগফল বীজগাণিতিক নিয়মানুযায়ী সংখ্যামানের যোগের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। সামান্তরিক ত্রিভুজ ইত্যাদির সংযোজন উপপাদ্যের সূত্রানুযায়ী সম্পাদিত হয় না।
(Q) নীচের রাশিগুলির মধ্যে কোনটির একক মৌলিক ও কোনটির একক লব্ধ? সরণ, আয়তন, সময়, বল, ভরবেগ, ঘনত্ব।
Ans : সরণ ও সময়ের একক মৌলিক এবং আয়তন, বল, ভরবেগ ও ঘনত্বের একক লব্ধ।
(Q) নীচের রাশিগুলির মধ্যে কোনটির একক মৌলিক ও কোনটির একক লব্ধ তা উল্লেখ করো: সরণ, বেগ, ক্ষেত্রফল, উচ্চতা, ঘনত্ব, তরঙ্গ দৈর্ঘ্য।
Ans : সরণ, উচ্চতা, তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের একক মৌলিক একক এবং বেগ, ক্ষেত্রফল এবং ঘনত্বের একক লব্ধ একক।
(Q) SI ও MKS পদ্ধতির মূল পার্থক্য লেখো।
Ans : আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পরিমাপ পদ্ধতি হল SI পদ্ধতি। এক্ষেত্রে মূল এককের সংখ্যা সাতটি। SI পদ্ধতিতে সাতটি ভৌত রাশি হল দৈর্ঘ্য, ভর, সময়, তাপমাত্রা, দীপন প্রাবল্য, তড়িৎপ্রবাহ ও পদার্থের পরিমাণ। অপরদিকে, MKS পদ্ধতি দৈর্ঘ্য, ভর এবং সময় এই তিনটি ভৌত রাশির একক দ্বারা গঠিত।
(Q) ভৌত রাশি পরিমাপের জন্য যে একক বাছা হয়, তার বৈশিষ্ট্য কী কী?
Ans : একক বাছার বৈশিষ্ট্য:(i) এককটি সুস্পষ্ট ও নির্দিষ্ট হওয়া বাঞ্ছনীয়। (ii) যে ভৌত রাশিটি মাপা হচ্ছে তার তুলনায় এককটি খুব ছোটো বা খুব বড়ো হওয়া উচিত নয়। (iii) সময়ের সঙ্গে চাপ, তাপমাত্রা ইত্যাদির এককের কোনো পরিবর্তন হওয়া উচিত নয়। (iv) একক এমন হওয়া উচিত যা সহজে পুনরুদ্ধার করা যায়।
(Q) নীচের রাশিগুলির মধ্যে কোনটির একক মৌলিক ও কোনটির একক লব্ধ? ভর, ওজন, বেগ, ত্বরণ।
Ans : ভরের একক মৌলিক একক এবং ওজন, বেগ ও ত্বরণের একক লব্ধ একক।
(Q) একক প্রকাশের পদ্ধতিগুলি কী কী?
Ans : একক প্রকাশের জন্য চারটি পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এগুলি হল-(i) CGS বা মেট্রিক পদ্ধতি, (ii) FPS বা ব্রিটিশ পদ্ধতি, (iii) MKS পদ্ধতি এবং (iv) SI বা আন্তর্জাতিক একক পদ্ধতি। বিজ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে বর্তমানে CGS এবং SI পদ্ধতি দুটি ব্যবহার করা হয়।
(Q) গড় সৌরদিন কাকে বলে? সেকেন্ডে এর মান কত?
Ans : গড় সৌরদিন:এক বছরের সমস্ত সৌরদিনকে যোগ করে ওই যোগফলকে 365 দিয়ে ভাগ করলে যে মান পাওয়া যায় তাকে এক গড় সৌরদিন বলে।
1 গড় সৌরদিন = 24 ঘণ্টা = 24×60×60 সেকেন্ড = 86,400 সেকেন্ড
(Q) SI এবং CGS পদ্ধতিতে ভরের এককগুলি কী কী?
Ans : SI-তে ভরের একক কিগ্রা এবং CGS পদ্ধতিতে ভরের একক গ্রাম।
(Q) লিটারের সংজ্ঞা দাও।
Ans : লিটার:4°C উষ্ণতায় 1 কিলোগ্রাম বিশুদ্ধ জলের আয়তনকে এক লিটার বলা হয়। SI পদ্ধতিতে তরল পদার্থের আয়তনকে এই এককে প্রকাশ করা হয়।
(Q) লিটারের সংজ্ঞায় 4°C অথবা 277 K উষ্ণতা উল্লেখ করতে হয় কেন?
Ans : 4°C উষ্ণতায় বিশুদ্ধ জলের ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি। এই উষ্ণতায় এক কিলোগ্রাম জলের আয়তনকে 1 লিটার ধরা হয়। জলের উষ্ণতা 4°C থেকে কম বা বেশি হলে জলের ঘনত্ব কমে। ফলে 4°C-এর কম বা বেশি উষ্ণতায় 1 কিলোগ্রাম জলের আয়তন 1 লিটার থেকে বেশি হয়। তাই নির্দিষ্ট আয়তন এই বোঝাতে লিটারের সংজ্ঞায় 4°C বা 277 K উষ্ণতার উল্লেখ থাকে।
(Q) SI পদ্ধতিতে দৈর্ঘ্যের এককের সংজ্ঞা দাও।
অথবা, SI-তে প্রমাণ মিটার কাকে বলে?
Ans : SI পদ্ধতিতে দৈর্ঘ্যের একক মিটার।
মিটারের সংজ্ঞা: ফ্রান্সের প্যারিস শহরে আন্তর্জাতিক ব্যুরো অফ্ ওয়েটস অ্যান্ড মেজারস্-এর অফিসে 0°C (বা 273 K) উষ্ণতায় প্ল্যাটিনাম ও ইরিডিয়াম (9: 1) সংকর ধাতু দিয়ে তৈরি একটি দন্ড রাখা আছে। ওই দন্ডের ওপর নির্দিষ্ট দুটি দাগের মাঝের দূরত্বকে এক মিটার বলে।
মিটারের আধুনিক সংজ্ঞা:86 ভরসংখ্যার ক্রিপটন (Kr86) গ্যাসের উদ্দীপ্ত অবস্থায় কমলা বর্ণের যে আলোক বিকীর্ণ হয়, তার তরঙ্গদৈর্ঘ্যের 1650763.75 গুণ দৈর্ঘ্যকে 1 মিটার বলে।
(Q) দুটি ভেক্টর রাশির গুণফল একটি স্কেলার রাশি উদাহরণ দাও।
Ans : কার্য= বল x সরণ, এখানে কার্য স্কেলার রাশি কিন্তু বল ও সরণ ভেক্টর রাশি।
(Q) দৈর্ঘ্যের প্রমাণ এককের সংজ্ঞায় তাপমাত্রার উল্লেখ করা হয় কেন?
Ans : তাপমাত্রার পরিবর্তনে কঠিন পদার্থের দৈর্ঘ্যের পরিবর্তন ঘটে। তাপমাত্রা বাড়লে কঠিন পদার্থের দৈর্ঘ্য বাড়ে এবং তাপমাত্রা কমলে কঠিন পদার্থের দৈর্ঘ্য কমে। একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় একটি কঠিন পদার্থের দন্ডের দৈর্ঘ্য নির্দিষ্ট। ফলে 0°C তাপমাত্রায় প্রমাণ মিটারের যা দৈর্ঘ্য সেই তাপমাত্রায় স্কেলটি সঠিক মাপ দেখায়। সেইজন্য প্রমাণ মিটারের সংজ্ঞায় তাপমাত্রার উল্লেখ করা হয়।
(Q) মিটারের সংজ্ঞায় নির্দিষ্ট উপাদানের উল্লেখ করার প্রয়োজন হয় কেন?
Ans : একই উষ্ণতার পরিবর্তনে বিভিন্ন ধাতুর দৈর্ঘ্যের হ্রাসবৃদ্ধি বিভিন্ন হয়। সেইজন্য একটি নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য পরিমাপের জন্য একটি নির্দিষ্ট উপাদানের প্রয়োজন। তাই মিটারের সংজ্ঞায় একটি নির্দিষ্ট উপাদানের (প্ল্যাটিনামের ও ইরিডিয়ামের সংকর ধাতু) উল্লেখ করা হয়। তা ছাড়া, প্ল্যাটিনাম ও ইরিডিয়ামের সংকর ধাতু সহজে ক্ষয় হয় না। ফলে স্কেলটির দৈর্ঘ্য কমে যাওয়ার সম্ভাবনা কম।
(Q) ঘনত্ব কাকে বলে?
ঘনত্বের সঙ্গে বস্তুর ভরের সম্পর্ক কী?
Ans : ঘনত্ব: কোনো পদার্থের একক আয়তনের ভরকে ওই পদার্থের ঘনত্ব বলে।
ঘনত্ব =পদার্থের ভর / পদার্থের আয়তন
(Q) CGS ও SI পদ্ধতিতে ঘনত্বের একক লেখো।
Ans : ঘনত্বের একক: CGS পদ্ধতিতে ঘনত্বের একক গ্রাম সেমি-3 (g cm-3); SI পদ্ধতিতে ঘনত্বের একক কিগ্রা মিটার-3 (kg m-3)।
(Q) লোহার ঘনত্ব 7.8 g cm-3 বলতে কী বোঝো?
Ans : লোহার ঘনত্ব 7.8 g cm-3 বলতে বোঝায় যে, 1 ঘনসেন্টিমিটার লোহার ভর 7.8 গ্রাম।
(Q) সৌরদিন কাকে বলে?
Ans : সৌরদিন: পৃথিবীর কোনো স্থানের ভৌগোলিক মধ্যরেখাকে অতিক্রম করার পর পুনরায় সেই স্থানে ফিরে আসতে সূর্যের যে সময় লাগে, সেই সময়কে বলে এক সৌরদিন।
(Q) সেকেন্ড-এর আধুনিক সংজ্ঞা দাও।
অনুরূপ প্রশ্ন: SI-তে সময়ের এককের সংজ্ঞা লেখো।
Ans : সেকেন্ডের আধুনিক সংজ্ঞা:সিজিয়াম পরমাণুর 9,192,631,770টি পূর্ণ অভ্যন্তরীণ কম্পনের জন্য যে সময় প্রয়োজন তাকে 1 সেকেন্ড বলে।
(Q) বস্তুর ভর বলতে কী বোঝো?
Ans : ভর:কোনো বস্তুর মধ্যে যে পরিমাণ জড়পদার্থ থাকে তাকে ওই বস্তুর ভর বলে।