View SAQ Question

(Q) পরিবেশের ইতিহাস বলতে কী বোঝায়?

Ans : প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে মানবসমাজের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া বা মিথষ্ক্রিয়ার ইতিহাস সুদীর্ঘ। এই মিথস্ক্রিয়ার ইতিহাস পরিবেশের ইতিহাস নামে পরিচিত।

(Q) আধুনিক ভারত ইতিহাসের উপাদানরূপে আত্মজীবনীর গুরুত্ব কী?

Ans : বিভিন্ন ব্যক্তির লেখা আত্মজীবনী ইতিহাসের উপাদান হিসেবে বিভিন্নভাবে ব্যবহৃত হতে পারে-[1] আত্মজীবনী থেকে অনেক সময় সমকালীন সময়ের রাজনৈতিক ঘটনাবলির কথা জানা যায়। [2] আত্মজীবনীতে উল্লিখিত সমকালীন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ইতিহাসের উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। [3] আত্মজীবনীতে উল্লিখিত সমকালীন আর্থসামাজিক ঘটনাবলিও ইতিহাস রচনায় ব্যবহৃত হতে পারে। [4] আত্মজীবনীতে উল্লিখিত লেখকের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধিগুলি ইতিহাসের মূল্যবান উপাদান হিসেবে কাজে লাগতে পারে।

(Q) আধুনিক ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা-বিস্তারের ক্ষেত্রে ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দ গুরুত্বপূর্ণ কেন?

Ans : শিক্ষাক্ষেত্রে ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদের গুরুত্ব ছিল যে, এর দ্বারা-[1] কোম্পানি প্রতি বছর ১ লক্ষ টাকা ভারতীয় জনশিক্ষার জন্য ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নেয়। [2] ভারতে জনশিক্ষার নীতি নির্ধারণের উদ্দেশ্যে ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে 'জনশিক্ষা কমিটি' বা 'কমিটি অব পাবলিক ইন্সট্রাকশন' গঠিত হয়।

(Q) ভারতে আধুনিক পাশ্চাত্য চিকিৎসা বিদ্যার ক্ষেত্রে ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দ স্মরণীয় কেন?

Ans : ভারতে আধুনিক পাশ্চাত্য চিকিৎসাবিদ্যার ক্ষেত্রে ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দ স্মরণীয়, কারণ-[1] ভারতীয় শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ভাষায় ইউরোপীয় চিকিৎসাশাস্ত্র বিষয়ে শিক্ষাদান, [2] জাতি- বর্ণনির্বিশেষে ভারতীয় যুবকদের আধুনিক পাশ্চাত্য চিকিৎসাবিদ্যায় দক্ষ করে তোলা, [3] দেশের বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়মিত দক্ষ ডাক্তার ও নার্স জোগান দেওয়া প্রভৃতি উদ্দেশ্যে ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দে কলিকাতা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়।

(Q) 'পাইক' কাদের বলা হত?

Ans : ঔপনিবেশিক আমলে মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, ধলভূম প্রভৃতি স্থানের জমিদারের অধীনস্থ যে রক্ষী বাহিনী, তাদের 'পাইক' বলা হত। তারা বেতনের পরিবর্তে নিষ্কর জমি ভোগ করত।

(Q) 'হেদায়তী' নামে কারা পরিচিত ছিল?

Ans : বাংলায় ওয়াহাবি আন্দোলনের অন্যতম নেতা তিতুমিরের অনুগামীরা 'হেদায়তি' নামে পরিচিত ছিল।

(Q) 'বর্তমান ভারত' গ্রন্থটি কীভাবে জাতীয়তাবাদ উন্মেষে সাহায্য করেছিল?

Ans : স্বামী বিবেকানন্দের 'বর্তমান ভারত' গ্রন্থটি ভারতবাসীর মধ্যে স্বদেশচেতনা ও দেশপ্রেম জাগ্রত করে, সামাজিক অস্পৃশ্যতা ও জাতিভেদ প্রথা দূর করার আবেদন জানিয়ে, পাশ্চাত্যকে অন্ধ অনুকরণ না করে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার পরামর্শ দিয়ে, দেশের জন্য আত্মবলিদানের পরামর্শ দিয়ে ভারতের জাতীয়তাবাদ উন্মেষে সাহায্য করেছিল।'

(Q) গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর স্মরণীয় কেন?

Ans : উনিশ শতকের বাংলা তথা ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ব্যঙ্গচিত্রের মধ্য দিয়ে ঔপনিবেশিক সমাজ ও ব্রিটিশ শাসনের বর্বরতা, নিপীড়ন প্রভৃতি নেতিবাচক দিকগুলি তুলে ধরতেন। সে যুগে ব্যঙ্গচিত্রের মাধ্যমে এই ধারণ্য অন্য কোনো চিত্রকর এতটা সাফল্যের সঙ্গে তুলে ধরেননি। তাই তাঁকে 'বাংলা ব্যঙ্গচিত্রের জনক' বলা হয়।

(Q) 'বিদ্যাসাগর সাট' বলতে কী বোঝায়?

Ans : শিক্ষা ও সমাজ সংস্কারের সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যাসাগর ছাপাখানার জগতেও তাঁর প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন। তিনি বাংলা মুদ্রণের জন্য অক্ষরবিন্যাসের এক বিশেষ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। এই পদ্ধতিই 'বিদ্যাসাগর সাট' নামে পরিচিত।

(Q) বাংলা ছাপাখানার ইতিহাসে বটতলা প্রকাশনার গুরুত্ব কী?

Ans : বাংলা ভাষায় বই ছাপার প্রথম পর্বে উনিশ শতকে উত্তর কলকাতার বটতলা প্রেস থেকে ধর্ম সাহিত্য, পঞ্জিকা, নীচুমানের সাহিত্য প্রভৃতি বহু সুলভ বইপত্র প্রকাশিত হত। এই প্রকাশনার গুরুত্বগুলি ছিল- [1] বাঙালি পাঠকের কাছে সুলভে বই পৌঁছে দিয়ে তাদের মধ্যে জ্ঞানের প্রসার ঘটানো, [2] বাংলা মুদ্রণ শিল্পের বিকাশ, [3] বাংলা ভাষার বিকাশ, জাতীয়তাবাদের বিকাশ প্রভৃতি কাজে সহায়তা করা।

(Q) কৃষক আন্দোলনে বাবা রামচন্দ্রের কীরূপ ভূমিকা ছিল?

Ans : গান্ধিজির নেতৃত্বে কংগ্রেসের অহিংস অসহযোগ আন্দোলন চলাকালীন বাবা রামচন্দ্রের নেতৃত্বে উত্তরপ্রদেশে কৃষকদের অংশগ্রহণে 'একা আন্দোলন' শক্তিশালী হয়ে ওঠে। বাবা রামচন্দ্র জওহরলাল নেহরুকে গ্রামে এসে কৃষকদের দুর্দশা সচক্ষে দেখার অনুরোধ জানান (১৯২০)।

(Q) সর্বভারতীয় ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস কী উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়?

Ans : নিখিল ভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্দেশ্যগুলি ছিল- [1] আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠনে ভারতীয় সংগঠনের সদস্যপদ গ্রহণ করা, (2) ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী আন্দোলনের মধ্যেই সংগঠিত শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তোলা। [3] শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিদাওয়া আদায় করা প্রভূতি।

(Q) জাতীয় আন্দোলনে সরলাদেবী চৌধুরাণীর কীরূপ ভূমিকা ছিল?

Ans : সরলাদেবী চৌধুরানী [1] পত্রিকা ও সংগঠনের মাধ্যমে নারীদের জীবনে নবজাগরণের সূচনা করেন, [2] স্বদেশি আন্দোলনের সময় বয়কট ও স্বদেশি আন্দোলনকে জনপ্রিয় করে তোলেন, [3] নারীশিক্ষার প্রসারে সহায়তা করেন, [4] সামাজিক কুসংস্কার দূর করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নেন। এইসকল কাজের জন্য তাঁকে 'বাংলার নারীজাতির জননী' বলা হয়।

(Q) সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে 'ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মির কীরূপ ভূমিকা ছিল?

Ans : বিপ্লবী সূর্য সেন কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি (IRA) ছিল ব্রিটিশ ভারতে সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন। এই সংগঠন [1] ভারতের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্য নেয়, [2] সশস্ত্র সংগ্রামকে লড়াইয়ের পন্থা হিসেবে গ্রহণ করে, [3] ব্রিটিশ কর্মকর্তা, পুলিশ ও সরকারি লুণ্ঠন, লাহোরে স্থাপনার উপর সশস্ত্র আক্রমণ চালায়, [4] চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার সন্ডার্স-এর হত্যা, বাংলার গভর্নরের উপর আক্রমণ প্রভৃতির মাধ্যমে তারা ব্রিটিশ শাসকদের আতঙ্কিত করে।

(Q) সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলকে 'ভারতের লৌহমানব' কেন বলা হয়?

Ans : ভারতের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার প্যাটেলকে ভারতের লৌহমানব বলা হয়, কারণ- [1] তিনি ছিলেন সর্বদা নীতি ও আদর্শে অটল। [2] তিনি অনমনীয় দৃঢ়তার সঙ্গে স্বাধীন ভারতে অধিকাংশ দেশীয় রাজ্যের ভারতভুক্তি ঘটান।

(Q) উদ্বাস্তু সমস্যা বলতে কী বোঝায়?

Ans : ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে দেশভাগ ও ভারতের স্বাধীনতা লাভের পর পাকিস্তানের অসংখ্য সংখ্যালঘু হিন্দু ও শিখ নিজেদের মাতৃভূমি ছেড়ে নিঃস্ব অবস্থায় ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। ফলে বিভিন্ন অঞ্চলে জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেলে কর্মসংস্থান, খাদ্যসংস্থান প্রভৃতি ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়। সরকারও আগত উদ্বাস্তুদের জন্য ত্রাণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হিমসিম খায়। এর ফলে যে সমস্যা সৃষ্টি হয় তা উদ্বাস্তু সমস্যা নামে পরিচিত।